১)
সব সুখ ক্ষয়ে গেছে নক্ষত্রের পতন
তবুও আমি বেঁচে আছি কাংগালের মতন,
এত সুর এত জোয়ার এত প্লাবন
আমায় খেয়েছে যাব না যাবে না মন ।
রিক্ত হস্তে পেয়েছিলাম তোমায়
দিয়েছিলে দিয়েছিলাম পরিপূর্ণে
আজ ফেলে দিয়ে আমায় ,
কি রুপে তুমি এ হস্ত ছোয়াবে
নতুন কোন টানে ?
আমি তো অন্ধ হয়েছি চোখ নেই
মেলিবার নতুন কোন পথে,
এ বড়ই মর্মান্তিক হয়নি তো গভীর থেকে গভীরতর
অন্ধ তোমার চোখ !
বিভ্রান্তি আর হাহাকারে পাছে
লোকে কিছু বলে,
কুজন হয়েছে জ্ঞাত আর আমি ক্ষত,
অগ্নিপরীক্ষা তোমার হ্রদয় জুড়িয়া
কে আছে সমান্তরাল,
নিজেই করো আড়াল,
আমার কান্না আমার জল
মুছে যাবে না কেন তোমাতেই সকল ?
(কবিতা টি অনেক আগে লিখা , হঠাৎ করে ডায়েরী টা পাওয়া গেলে এই কবিতা টি খুজে পেলাম, বেশ কয়েক বছর আগের আমার কিছু কিছু আবেগী মুহুর্ত কে এক করা হয়েছে কোন একজন কে হারাবার সময় )
২)
আজ তাই দেখে তারে কপালে চোখ হল বাকা,
কী ভীষন বদনখানি স্নিগ্ধতায় ভরা,
হাসিটুকু বলে দেই ষোল্ব আনাই পুরা ।
এই প্রথম দেখা হল শুরুতেই নাড়া
নাড়িতে নাড়া দিয়ে পড়ে গেল সাড়া,
সারাক্ষন কল মিসড এসএমএস ফাকা
রাত ভর দুঃখিত শুনে শুনে রাত টাই জাগা !
উথাল পাথাল আর উচাটং মন
এই টুকু দেখাতেই আনচান আনচান সারাক্ষন ।
৩)
যাহাঁ যাহাঁ নিকসয়ে তনু তনু জ্যোতি।
তাহাঁ তাহাঁ বিজুরি চমকময় হোতি।।
যাহাঁ যাহাঁ অরুনচরন চল চলই।
তাহাঁ তাহাঁ থল-কমল-দল খলই।।
(কথাগুলো আমাদের অপরিচিত, গোবিন্দদাস কী বলতে চেয়েছেন তা আমরা সাধারণত বুঝবো না। কবি এখানে রাধা’র বর্ণনা দিয়েছেন। রাধা যে খুব সুন্দর আমরা তা সবাই জানি, কবি এখানে সেই সৌন্দর্যের বর্ণনা করেছেন। রাধা তার সখীদের সাথে যাচ্ছে, কবি বলেছেন, রাধার শরীর থেকে যেখানে ছলকে পরেছে সৌন্দর্য, সেখানে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। যেখানে রাধা রাখছে তার আলতা রাঙানো পা, সেখানেই য্যানো রাধার পা থেকে ঝরে পরছে স্থলপদ্মের লাল পাপড়ি। কী সুন্দর বর্ণনা! )
মহাকবি গোবিন্দদাস
( ২)
মহাকবি বিদ্যাপতির কবিতা
হাথক দরপন মাথক ফুল ।
নয়নক অঞ্জন মুখক তাম্বুল।।
হ্রদয়ক মৃগমদ গীমক হার ।
দেহক সরবস গেহক সার ।।
পাখীক পাখ মীনক পানি।
জীবক জীবন হাম তুহু জানি।।
তুহু কঐসৈ মাধব কহ তুহু মোয়।
বিদ্যাপতি কহ দুঁহু দোঁহা হোয় ।।
(
রাধা নিজের কাছে জানতে চাইছে কৃষ্ণ তার কে হয়? তখন ভাবতে বসে রাধার মনে হয়, কৃষ্ণ তার হাতের আয়না, যাতে সে নিজেকে দেখে থাকে। তারপর মনে হয় কৃষ্ণ তার মাথার ফুল, যা তার শোভা বাড়িয়ে দেয়। তারপর বলতে থাকে
তুমি আমার চোখের কাজল, মুখের লাল পান।
তুমি আমার হৃদয়ের সৌরভ, গ্রীবার অলঙ্কার।
তুমি আমার শরীরের সর্বস্ব, আমার গৃহের সার।।
পাখির য্যামন পাখা থাকে এবং মাছের য্যামন পানি।
তুমি ঠিক তেমনি আমার, আমি তেমনি জানি।।
এতো ভেবেও তৃপ্ত হয় না রাধা, তখন কৃষ্ণকেই জিজ্ঞেস করে তুমি আমার কে? তার উত্তর দেন বিদ্যাপতি নিজে, বলেন “তোমরা দুইজন অভিন্ন”। মধু মধু!
)
৫)
বিষাদ তিক্ততা যন্ত্রনা
নিজের কাছে নিজের অসহায়ত্ব
তীব্র ঘৃনায় ফুসে উঠেছে,
আলোকিত আমার সবটুকু আলো
নিভিয়ে দিলাম কোন এক নীল অন্ধকারে!
হার না মেনে
মুক্তি নিয়ে জীবন থেকে
অন্য কোখাও অন্য এক ভুবনে
চলে যাব নিঃশেষিত পতনে,
তবুও হায় ! হায়
বন্ধু কর জোর করি তব স্থানে
ক্ষমা করে দিও মোরে
সব টুকু জুড়ে ।
৬)
চিন্তা করে প্রাণ নিত্তি,
পথে হল দেখা পথের সাথে পথে সন্ধি
ভালোবাসা বাসি কিছু নয় সবই মনের ফন্দি।
ইট পাথর কংক্রীটে গড়ে উঠে বড় ভিত
তবুও তা ভেংগে যায় থাকে শুধু মনের মিথ ।
তোমার আমার ভিত্তি
নাই বালি নাই সিমেন্ট
তবুও তা হতে পারে
সুখ স্মৃতি প্রেম সৃষ্টি ।
7)
দাপাদাপিতে মেতেছে আজ
আমাদের বন্ধন,
কখনও নিভে আবার জ্বলে উঠে
কখন ও রাত্রি কখন দিন
কখন কান্না আবার হাসিঁ।
এখনো তোমার চোখে
স্বপ্ন বুনি,
এখনো প্রকম্পিত হই
তোমার অবারিত বুননে,
একদা যে হাসিঁ তোমাকে মুগ্ধ করেছে
এখন তা আমার প্রান।
এখন চোখ বুজে
নতুন জগৎ খুজি তোমার হাতে,
বিবর্ন স্মৃতিগুলোকে ঝলসে ফেলেছি
তোমার ভালোবাসার ফল্গুধারায়।
তোমার চোখে চোখ রেখে
এখন খুঁজি
শ্রাবস্তীর কারুকাজ অথবা নাটোরের বনলতা সেন,
তোমাকে অনেক যুগ কিংবা বছর
কাল উত্তীর্ন করে রেখেছি,
এখনো গভীর রাতে তুমি কেঁদে উঠো
এখন আমি স্পর্শ করি
তোমার ছায়ায় কিংবা একাকীত্বে,
এখন তেমনি আছো
আগের মতই------
মায়াবী পৃথিবীর প্রতিটি অস্তিত্বে
আমার শুন্য ভাবনায়
নীরবে নিভৃতে নির্জনে,
আবিষ্ট হয়েছি
অবগাহন করেছি
এ হাত ধরে আবারো মেতে উঠি
এসো আমার কাছে এসো
এসো প্রিয় বুকে।
8)
''পথের সাথে হল পথের সন্ধি
পথ ফুরালেই আবারো যুগল বন্দী,
ভালবাসা বাসি কিছু নয়
সবই মনের ফন্দি''
খ)
''একবার সেই ভাবে ডাক ,
যাতে আটলান্টিকের বুকে ঝড় উঠে
ফুঁসে উঠে সমুদ্রের জল
যেমন সীতার ডাকে দ্বিধা হয়েছে ধরিত্রি,
যদি ডাক সেই ভাবেই ডাক
সেই ভাবেই বুকে টেনে নাও
অচল পাহাড়ও দ্যাখো
ছুটে যাবে তোমার সান্নিধ্যে''
9)
তোমার দুগ্ধ ফলের মহিরুহে
কী এমন সুখ !
আজন্ম সুধা তার মাঝে,
এ ফলের ঘ্রাণ মেখেছি সারা অংগে
ঘ্রাণ ছুয়েছে ঠোট, নাসারন্ধ্র, চোখ, মুখায়ব
অমৃত সুধায় অপলক তাকিয়েছি
চোখ নির্লিপ্ত
অবগাহন করতে চাইছে আমার পৌরুষ
তোমার নারীত্ব রমণীয়।
শুধায় শুধায় মত্ততা
মাতাল মাতাল সারাটা কাল,
একি গভীর উছ্বসিয়া আকুলতা,
প্রণয়ের দুয়ারে দুয়ার মিলেছে
স্বপ্ন ভাংগা স্বপ্নহারা
দুটি নির্জীব পাখি,
স্বপ্ন দেখছে স্বপ্ন ভাংগার আশায় ।
10)
স্বপ্নের পাঠশালা তুমি আমি ভালোবাসা
ষোড়শী বিশাল মাঠ
অশথ্ব বৃক্ষের তলে হায় আমাদের রান্না বাটী খেলা,
আহা! কতকালের ভালোলাগা
ছোট নদীটা কত বড় ছিল মনে প্রানে সাতার কাটা,
বন্ধু তুমি আরেক টা প্রান
আমার প্রতি কেন এত টান,
এত মায়া এত টুকুন বয়স
নিজের পালকে ওম দিয়েছিলে কনকনে শীত তাড়াতে।
এমন করে আর কেউ কখনো দেই নি আমায়
বুকের উপর বুক পেতে,
রাখতে আমায় আগলে রাখতে আমায় হ্রদপিন্ডে,
আহারে ! আহারে! আহারে!
বুক ফেটে যায় বুক ভেসে যায়
তার অসীম অনুভবে,
স্বর্গস্রোতে ভেসে গেছে স্বর্নলতা
আজো প্রতিরাতে খুজে ফিরি তারে !
(প্রয়াত অগ্রজ দেওয়ান সিরাজুল ইসলামের স্মরনে, যে আমার এক বছর আগে পৃথিবীতে এসেছিল ,কাউকে না বললে বোঝা দায় ছিল যে আমরা সহোদর, সে ছিল আমার প্রানের বন্ধু, ১৯৯৬ সালের ৫ই আগস্ট এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় যিনি প্রাণ হারান)
11)
একবার ছেড়ে দিয়ে বাচঁতে চাই,
শ্বাস প্রশ্বাস গুলি
দিয়ে দিয়েছি এক স্বপ্নচারিণীর হাতে
এখন তার দেহেই শ্বাস নিয়ে বাচিঁ,
দীর্ঘশ্বাস গুলি আমারই থাকুক
স্বপ্নচারিণীর ছিল
অবারিত কন্টকাকীর্ণ পথ
যে পথে গেলে পথ ভুলে যায় পথিক
সেই পথে আমি আমার
প্রাগৈতিহাসিক স্বপ্ন মেলে দিয়েছি
এখন দুটি পথ
স্বপ্নচারিণী এবং দীর্ঘশ্বাস,
অসমীকরণের পথে বীজ বুনি
সমীকরণ ফলনের ,
হয়তোবা ভেঙ্গে যাবে
না হয় ভাংতে ভাংতে
গড়ব নীল মনিহার ।
12)
বুক ভেংগেছে বুক ফেটেছে
আশা হয়েছে ক্ষত
পালিয়ে গেলেই মাথা কেটেছে
হাত রয়েছে বন্ধ।
চোখ ভিজেছে জল নেমেছে
পণ হয়েছে কার্পণ্য
আজ আকাশে মেঘ জমেছে
আধারে আধিয়ার নিমগ্ন ।
বুকের মাঝে আরেকটি বুক
হ্রদপিন্ডে আরেকটি পিন্ড
একটি মুখে দুইটি মুখ
শ্বাস দিয়েছে শ্বাস যন্ত্র ।
আমার আছে শূন্য শূন্য
যোগফল তারতম্য বিচ্ছেদ
আজ আমাতে ঠাই নিয়েছে
নিঝুম অরণ্য,
গভীর রাতের নির্জনতায়
একটি তারা জ্বলন্ত।
13)
তবুও আমি স্বপ্ন দেখি
চোখ মেলিয়ে সব ছাড়িয়ে
ঝমঝমিয়ে বৃস্টি নেমে
দুঃখ গুলো যাক বেরিয়ে,
স্বপ্ন ছাড়া জীবনটাকে
যায় না পাওয়া জীবন্তে,
হারিয়ে গিয়ে যাবে কোথায় ?
ছিড়তে পারো আমার নাগাল
স্বপ্নটা যে থামবে যেথায়
উঠবে সেজে সেথা বিশালতায়,
ছেড়ে যাবে আমায় তুমি
ফেলে যাবে হ্রদয় খানি,
হৃদয় বিহীন শরীরটাকে
পাই বা না পাই কার কি তাতে ?
যে পেয়েছে সে হেরেছে
আমি তো আর হার মানি নাই,
হৃদয় খানি আমার ছিলো
আমার সম্পদ দখল ছাড়া
ছিনিয়ে নিলো সমাজ রীতি,
শূন্য হাতে কৃপা ভরে আগলে আছে
সবাক স্মৃতি,
আমার তো আর আর পোড়েনা
পুড়তে পুড়তে নিংড়ানো খাটি
আকাশ আমার ভরে গেছে
দুঃখ মালার দীপ্ত স্বাতী,
এই টুকুতেই বেঁচে থাকা
এই টুকুতেই জীবন জোড়া আগলে থাকি
মন মনিতে মনপুরা ।
সব সুখ ক্ষয়ে গেছে নক্ষত্রের পতন
তবুও আমি বেঁচে আছি কাংগালের মতন,
এত সুর এত জোয়ার এত প্লাবন
আমায় খেয়েছে যাব না যাবে না মন ।
রিক্ত হস্তে পেয়েছিলাম তোমায়
দিয়েছিলে দিয়েছিলাম পরিপূর্ণে
আজ ফেলে দিয়ে আমায় ,
কি রুপে তুমি এ হস্ত ছোয়াবে
নতুন কোন টানে ?
আমি তো অন্ধ হয়েছি চোখ নেই
মেলিবার নতুন কোন পথে,
এ বড়ই মর্মান্তিক হয়নি তো গভীর থেকে গভীরতর
অন্ধ তোমার চোখ !
বিভ্রান্তি আর হাহাকারে পাছে
লোকে কিছু বলে,
কুজন হয়েছে জ্ঞাত আর আমি ক্ষত,
অগ্নিপরীক্ষা তোমার হ্রদয় জুড়িয়া
কে আছে সমান্তরাল,
নিজেই করো আড়াল,
আমার কান্না আমার জল
মুছে যাবে না কেন তোমাতেই সকল ?
(কবিতা টি অনেক আগে লিখা , হঠাৎ করে ডায়েরী টা পাওয়া গেলে এই কবিতা টি খুজে পেলাম, বেশ কয়েক বছর আগের আমার কিছু কিছু আবেগী মুহুর্ত কে এক করা হয়েছে কোন একজন কে হারাবার সময় )
২)
পারিতেই পাড়ি !
পারি নিয়ে পাড়ি দিতাম হলে আগে দেখাআজ তাই দেখে তারে কপালে চোখ হল বাকা,
কী ভীষন বদনখানি স্নিগ্ধতায় ভরা,
হাসিটুকু বলে দেই ষোল্ব আনাই পুরা ।
এই প্রথম দেখা হল শুরুতেই নাড়া
নাড়িতে নাড়া দিয়ে পড়ে গেল সাড়া,
সারাক্ষন কল মিসড এসএমএস ফাকা
রাত ভর দুঃখিত শুনে শুনে রাত টাই জাগা !
উথাল পাথাল আর উচাটং মন
এই টুকু দেখাতেই আনচান আনচান সারাক্ষন ।
৩)
বৈষ্ণব পদাবলী
(১)যাহাঁ যাহাঁ নিকসয়ে তনু তনু জ্যোতি।
তাহাঁ তাহাঁ বিজুরি চমকময় হোতি।।
যাহাঁ যাহাঁ অরুনচরন চল চলই।
তাহাঁ তাহাঁ থল-কমল-দল খলই।।
(কথাগুলো আমাদের অপরিচিত, গোবিন্দদাস কী বলতে চেয়েছেন তা আমরা সাধারণত বুঝবো না। কবি এখানে রাধা’র বর্ণনা দিয়েছেন। রাধা যে খুব সুন্দর আমরা তা সবাই জানি, কবি এখানে সেই সৌন্দর্যের বর্ণনা করেছেন। রাধা তার সখীদের সাথে যাচ্ছে, কবি বলেছেন, রাধার শরীর থেকে যেখানে ছলকে পরেছে সৌন্দর্য, সেখানে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। যেখানে রাধা রাখছে তার আলতা রাঙানো পা, সেখানেই য্যানো রাধার পা থেকে ঝরে পরছে স্থলপদ্মের লাল পাপড়ি। কী সুন্দর বর্ণনা! )
মহাকবি গোবিন্দদাস
( ২)
মহাকবি বিদ্যাপতির কবিতা
হাথক দরপন মাথক ফুল ।
নয়নক অঞ্জন মুখক তাম্বুল।।
হ্রদয়ক মৃগমদ গীমক হার ।
দেহক সরবস গেহক সার ।।
পাখীক পাখ মীনক পানি।
জীবক জীবন হাম তুহু জানি।।
তুহু কঐসৈ মাধব কহ তুহু মোয়।
বিদ্যাপতি কহ দুঁহু দোঁহা হোয় ।।
(
রাধা নিজের কাছে জানতে চাইছে কৃষ্ণ তার কে হয়? তখন ভাবতে বসে রাধার মনে হয়, কৃষ্ণ তার হাতের আয়না, যাতে সে নিজেকে দেখে থাকে। তারপর মনে হয় কৃষ্ণ তার মাথার ফুল, যা তার শোভা বাড়িয়ে দেয়। তারপর বলতে থাকে
তুমি আমার চোখের কাজল, মুখের লাল পান।
তুমি আমার হৃদয়ের সৌরভ, গ্রীবার অলঙ্কার।
তুমি আমার শরীরের সর্বস্ব, আমার গৃহের সার।।
পাখির য্যামন পাখা থাকে এবং মাছের য্যামন পানি।
তুমি ঠিক তেমনি আমার, আমি তেমনি জানি।।
এতো ভেবেও তৃপ্ত হয় না রাধা, তখন কৃষ্ণকেই জিজ্ঞেস করে তুমি আমার কে? তার উত্তর দেন বিদ্যাপতি নিজে, বলেন “তোমরা দুইজন অভিন্ন”। মধু মধু!
)
৫)
নিরন্তর ক্ষমা কর মোরে!
জীবন আজ নর্দমাবিষাদ তিক্ততা যন্ত্রনা
নিজের কাছে নিজের অসহায়ত্ব
তীব্র ঘৃনায় ফুসে উঠেছে,
আলোকিত আমার সবটুকু আলো
নিভিয়ে দিলাম কোন এক নীল অন্ধকারে!
হার না মেনে
মুক্তি নিয়ে জীবন থেকে
অন্য কোখাও অন্য এক ভুবনে
চলে যাব নিঃশেষিত পতনে,
তবুও হায় ! হায়
বন্ধু কর জোর করি তব স্থানে
ক্ষমা করে দিও মোরে
সব টুকু জুড়ে ।
৬)
আমাদের ভিত
নাই ভিত নাই ভিত্তিচিন্তা করে প্রাণ নিত্তি,
পথে হল দেখা পথের সাথে পথে সন্ধি
ভালোবাসা বাসি কিছু নয় সবই মনের ফন্দি।
ইট পাথর কংক্রীটে গড়ে উঠে বড় ভিত
তবুও তা ভেংগে যায় থাকে শুধু মনের মিথ ।
তোমার আমার ভিত্তি
নাই বালি নাই সিমেন্ট
তবুও তা হতে পারে
সুখ স্মৃতি প্রেম সৃষ্টি ।
7)
হারিয়ে যাবে কোথায় মন মনি ?
কোন কিছু নেই সবটাই হারিয়ে গেছেদাপাদাপিতে মেতেছে আজ
আমাদের বন্ধন,
কখনও নিভে আবার জ্বলে উঠে
কখন ও রাত্রি কখন দিন
কখন কান্না আবার হাসিঁ।
এখনো তোমার চোখে
স্বপ্ন বুনি,
এখনো প্রকম্পিত হই
তোমার অবারিত বুননে,
একদা যে হাসিঁ তোমাকে মুগ্ধ করেছে
এখন তা আমার প্রান।
এখন চোখ বুজে
নতুন জগৎ খুজি তোমার হাতে,
বিবর্ন স্মৃতিগুলোকে ঝলসে ফেলেছি
তোমার ভালোবাসার ফল্গুধারায়।
তোমার চোখে চোখ রেখে
এখন খুঁজি
শ্রাবস্তীর কারুকাজ অথবা নাটোরের বনলতা সেন,
তোমাকে অনেক যুগ কিংবা বছর
কাল উত্তীর্ন করে রেখেছি,
এখনো গভীর রাতে তুমি কেঁদে উঠো
এখন আমি স্পর্শ করি
তোমার ছায়ায় কিংবা একাকীত্বে,
এখন তেমনি আছো
আগের মতই------
মায়াবী পৃথিবীর প্রতিটি অস্তিত্বে
আমার শুন্য ভাবনায়
নীরবে নিভৃতে নির্জনে,
আবিষ্ট হয়েছি
অবগাহন করেছি
এ হাত ধরে আবারো মেতে উঠি
এসো আমার কাছে এসো
এসো প্রিয় বুকে।
8)
অনুভবে অনুনয়ে একান্ত ভাবনাগুলি
ক)''পথের সাথে হল পথের সন্ধি
পথ ফুরালেই আবারো যুগল বন্দী,
ভালবাসা বাসি কিছু নয়
সবই মনের ফন্দি''
খ)
''একবার সেই ভাবে ডাক ,
যাতে আটলান্টিকের বুকে ঝড় উঠে
ফুঁসে উঠে সমুদ্রের জল
যেমন সীতার ডাকে দ্বিধা হয়েছে ধরিত্রি,
যদি ডাক সেই ভাবেই ডাক
সেই ভাবেই বুকে টেনে নাও
অচল পাহাড়ও দ্যাখো
ছুটে যাবে তোমার সান্নিধ্যে''
9)
মন মনি তুমি
স্বর্গীয় সুধা পান করেছিতোমার দুগ্ধ ফলের মহিরুহে
কী এমন সুখ !
আজন্ম সুধা তার মাঝে,
এ ফলের ঘ্রাণ মেখেছি সারা অংগে
ঘ্রাণ ছুয়েছে ঠোট, নাসারন্ধ্র, চোখ, মুখায়ব
অমৃত সুধায় অপলক তাকিয়েছি
চোখ নির্লিপ্ত
অবগাহন করতে চাইছে আমার পৌরুষ
তোমার নারীত্ব রমণীয়।
শুধায় শুধায় মত্ততা
মাতাল মাতাল সারাটা কাল,
একি গভীর উছ্বসিয়া আকুলতা,
প্রণয়ের দুয়ারে দুয়ার মিলেছে
স্বপ্ন ভাংগা স্বপ্নহারা
দুটি নির্জীব পাখি,
স্বপ্ন দেখছে স্বপ্ন ভাংগার আশায় ।
10)
আমার বন্ধু হারিয়ে গেছে
কত কালের স্বপ্ন রোদ ঘেষা দুপুরস্বপ্নের পাঠশালা তুমি আমি ভালোবাসা
ষোড়শী বিশাল মাঠ
অশথ্ব বৃক্ষের তলে হায় আমাদের রান্না বাটী খেলা,
আহা! কতকালের ভালোলাগা
ছোট নদীটা কত বড় ছিল মনে প্রানে সাতার কাটা,
বন্ধু তুমি আরেক টা প্রান
আমার প্রতি কেন এত টান,
এত মায়া এত টুকুন বয়স
নিজের পালকে ওম দিয়েছিলে কনকনে শীত তাড়াতে।
এমন করে আর কেউ কখনো দেই নি আমায়
বুকের উপর বুক পেতে,
রাখতে আমায় আগলে রাখতে আমায় হ্রদপিন্ডে,
আহারে ! আহারে! আহারে!
বুক ফেটে যায় বুক ভেসে যায়
তার অসীম অনুভবে,
স্বর্গস্রোতে ভেসে গেছে স্বর্নলতা
আজো প্রতিরাতে খুজে ফিরি তারে !
(প্রয়াত অগ্রজ দেওয়ান সিরাজুল ইসলামের স্মরনে, যে আমার এক বছর আগে পৃথিবীতে এসেছিল ,কাউকে না বললে বোঝা দায় ছিল যে আমরা সহোদর, সে ছিল আমার প্রানের বন্ধু, ১৯৯৬ সালের ৫ই আগস্ট এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় যিনি প্রাণ হারান)
11)
মন মনি (২)
দীর্ঘশ্বাস গুলি জমে আছে বহুকালএকবার ছেড়ে দিয়ে বাচঁতে চাই,
শ্বাস প্রশ্বাস গুলি
দিয়ে দিয়েছি এক স্বপ্নচারিণীর হাতে
এখন তার দেহেই শ্বাস নিয়ে বাচিঁ,
দীর্ঘশ্বাস গুলি আমারই থাকুক
স্বপ্নচারিণীর ছিল
অবারিত কন্টকাকীর্ণ পথ
যে পথে গেলে পথ ভুলে যায় পথিক
সেই পথে আমি আমার
প্রাগৈতিহাসিক স্বপ্ন মেলে দিয়েছি
এখন দুটি পথ
স্বপ্নচারিণী এবং দীর্ঘশ্বাস,
অসমীকরণের পথে বীজ বুনি
সমীকরণ ফলনের ,
হয়তোবা ভেঙ্গে যাবে
না হয় ভাংতে ভাংতে
গড়ব নীল মনিহার ।
12)
বুক ভেংগেছে বুক ফেটেছে
আশা হয়েছে ক্ষত
পালিয়ে গেলেই মাথা কেটেছে
হাত রয়েছে বন্ধ।
চোখ ভিজেছে জল নেমেছে
পণ হয়েছে কার্পণ্য
আজ আকাশে মেঘ জমেছে
আধারে আধিয়ার নিমগ্ন ।
বুকের মাঝে আরেকটি বুক
হ্রদপিন্ডে আরেকটি পিন্ড
একটি মুখে দুইটি মুখ
শ্বাস দিয়েছে শ্বাস যন্ত্র ।
আমার আছে শূন্য শূন্য
যোগফল তারতম্য বিচ্ছেদ
আজ আমাতে ঠাই নিয়েছে
নিঝুম অরণ্য,
গভীর রাতের নির্জনতায়
একটি তারা জ্বলন্ত।
13)
তবুও আমি স্বপ্ন দেখি
চোখ মেলিয়ে সব ছাড়িয়ে
ঝমঝমিয়ে বৃস্টি নেমে
দুঃখ গুলো যাক বেরিয়ে,
স্বপ্ন ছাড়া জীবনটাকে
যায় না পাওয়া জীবন্তে,
হারিয়ে গিয়ে যাবে কোথায় ?
ছিড়তে পারো আমার নাগাল
স্বপ্নটা যে থামবে যেথায়
উঠবে সেজে সেথা বিশালতায়,
ছেড়ে যাবে আমায় তুমি
ফেলে যাবে হ্রদয় খানি,
হৃদয় বিহীন শরীরটাকে
পাই বা না পাই কার কি তাতে ?
যে পেয়েছে সে হেরেছে
আমি তো আর হার মানি নাই,
হৃদয় খানি আমার ছিলো
আমার সম্পদ দখল ছাড়া
ছিনিয়ে নিলো সমাজ রীতি,
শূন্য হাতে কৃপা ভরে আগলে আছে
সবাক স্মৃতি,
আমার তো আর আর পোড়েনা
পুড়তে পুড়তে নিংড়ানো খাটি
আকাশ আমার ভরে গেছে
দুঃখ মালার দীপ্ত স্বাতী,
এই টুকুতেই বেঁচে থাকা
এই টুকুতেই জীবন জোড়া আগলে থাকি
মন মনিতে মনপুরা ।