বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৭

বীরাঙ্গনা টেপরি রানী

বীরাঙ্গনা টেপরি রানী













যুদ্ধে এখনও বইছে
যেন যুদ্ধে রচিত জীবনধারা
বিজয়ে সবাই হাসে
জ্বলে না তাদের শুকতারা  ।

হানাদারের লালসায় তৈরি
মনের সাথে দেহের বৈরি
যুদ্ধ ভরেছে মনে ব্যাথা
নির্যাতনে নির্মমতার বিষাদ্গাথা ।

সয়েছে লাঞ্চনা হাহাকারে যন্ত্রনা বঞ্চনা
বুক ভেঙ্গে যায় কেপে কেঁপে উঠে
ঐযে আসছে তেড়ে
 আমার মা জননী বীরাঙ্গনা ।

কাঁদে বুক কাঁদি আমি
বিজয়ে হাসেনি যারা ফোটেনি বানী
আসছে ঐযে আমার মা জননী
বীরাঙ্গনা টেপরি রানী ।

একাত্তরের একটু আগে ষোলোতে
মেহেদী রাঙ্গিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে
কত স্বপ্ন সাধ আহলাদে আঁকে
হারিয়ে গেল তা কোথায় কোন ফাকে ,

একাত্তরের মে তে রাজাকারেরা এসে
তুলে দেয় হানাদারের কাছে ঠেসে,
তিন দিনের লাল নীল
রঙের দংশনে রাঙ্গি
আকাশ ভারী বাতাস ভারী
কাঁদে ক্যাম্প শিয়ালডাংগী ।

অশ্রু ঝরে রক্ত ঝরে টাটকা
নির্যাতনের নির্মমতায় আটকা
নয় মাসে নির্যাতনের মেলেনা অংক
দুঃসহ স্মৃতি দুর্বিষহ অসংখ্য ,

একাত্তরেই হয়েছে একঘরে
স্বামী মরেছে তিয়াত্তরে
মেলেনি ঠাই আহারে
দুসন্তান নিয়ে অথৈ সাগরে ,

কাঁপছে ধরণি ভেঙ্গে পড়ছে আসমান খানি
আসছে আমার মা জননী টেপরি রানী ,
কাঁদে বুক কাঁদি আমি
বিজয়ে হাসেনি যারা ফোটেনি বানী
বীরাঙ্গনা মা জননী টেপরি রানী ।



কিনে অমূল্য দামের রক্তে
ভিত গড়েছে শক্তে
বীরকন্যার আত্মত্যাগে পবিত্র মাটি
তোমাদের অমুল্য দানে  খাটি  ।


(১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন বীরাঙ্গনা টেপরি রানী যার   পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে পাকিস্তানী সেনা ও রাজাকাররা ইচ্ছামতো নির্যাতন করত। সবার কথা চিন্তা করে সব মুখ বুজে সহ্য করেছেন। তাকে মেরে ফেলার জন্য তিনি পাকিস্তানী সেনাদের বারবার আকুতি করেছিল কিন্তু তারা তা করেনি। আত্মহত্যা করে জীবন বিপন্ন করতে তিনি চাননি। ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার বলিদ্বারা গ্রামের টেপরি রানী যিনি একজন বীরাঙ্গনা মা জননী তার প্রতি বিনম্র সালাম, জাতি আপনার এই সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ রাখবে )

সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৭

পায়রা ও পিঁপড়া





পিঁপড়া বনের ধারে
আরামে বসবাস করে 
খাবারের খোঁজে ছোটে 
গাছ বেঁয়ে উঠে ।

হঠাৎ ঝপাত পাছে
পানিতে পড়ল কাছে
চিৎকার গিয়ে ঠেকে
পায়রা চেয়ে দেখে,

পিঁপড়া পানির আড়ালে
পাতা ফেলে বাড়ালে,
ডূব দিয়ে থেকে
পাতাখানি পিপড়া দেখে ,
পাতায় উঠে লড়ে
ডাঙ্গায় এসে পড়ে  ।

খুশিতে পিঁপড়া নাচে
খুঁজে পায়রা পাছে
জীবন বাঁচালে পক্ষী
বন্ধু তুমি লক্ষী ।

পায়রার কাছে আসে
জরিয়ে ধরে হাঁসে ।
এই কথা শোনো
বিপদে পড়লে কোনো
উড়ে দৌড়ে গিয়ে
বাঁচাব জীবন দিয়ে ।

বেশ কিছুদিন পরে
পিপড়া ছুটে চলে,
 দুটি পা দাড়াল
পিঁপড়া তাই খাড়াল
শিকারীর হাতে তীর
তাক করেছে স্থির,

পায়রা বসেছে ডালে
শিকারীর তীর আড়ালে
যেই শুধু বাড়ালে
পিপড়া জোরে কামড়ালে,

কামড়ে চিৎকার করে
পায়রা দেখল ভিতরে
ছোট পিঁপড়ার চেষ্টায়
রক্ষা পেল শেষটায় ,

পিঁপড়া পায়রা রবে
চিরদিনের বন্ধু হবে
সারাবেলা আসতে যেতে
দুজনেই রইল মেতে ।