বুধবার, ২ আগস্ট, ২০১৭

সমাজ বদলের কারিগর ডিআইজি হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ পুলিশের দীপ্তিমান দীপাঞ্জন




অনেক প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি হতাশা ক্ষোভ অনুনয় অভিযোগ অনুযোগ আলো আঁধারের মাঝে বাংলাদেশ পুলিশের দীপ্তিমান দীপাঞ্জন হচ্ছেন  ডিআইজি হাবিবুর রহমান । প্রায়ই   গৌরবোজ্জ্বল এই পুলিশ বিভাগকে নানা  প্রশ্নবিদ্ধতার মুখোমুখি হতে হয়  ঠিক সেই মুহূর্তে যার  সার্বিক  কর্মকাণ্ড এই বিভাগকে  সন্মাননা দিয়েছে এবং  ভাবমূর্তিকে  করেছে জ্বজৌল্যমান ।

রবীন্দ্রনাথের ভাষায়
অন্ধকারের উৎস-হতে উৎসারিত আলো
সেই তো তোমার আলো!
সকল দ্বন্দ্ব-বিরোধ-মাঝে জাগ্রত যে ভালো
সেই তো তোমার ভালো ॥

ঐতিহ্যবাহী আমাদের বাঙ্গালী-পনায় পুলিশ নামক শব্দটি হচ্ছে  বরাবরই অতীব কৃচ্ছতায় ঢাকা, এই কৃচ্ছতা সাধনের ফলে অনেক সময় পুলিশ জনগনের   বন্ধু হতে গিয়ে বলি হয়েছে পেশাদারিত্বের পাঠা , এমনই নিরস বিরস কিয়দংশে সারস হয়ে গেছি আমরা এই মহান পেশার পেশাদারেরা

নিতান্তই মনের গভীরের কিছু বোধ নিঃসৃত করলাম , সর্বাগ্রেই শুধু বহুদোষে দুষ্ট পুলিশ? এ সমাজ সভ্যতা রাষ্ট্র সব কিছুর দায়বদ্ধতা শুধুই  কি পুলিশের ? এই প্রশ্নের জবাব নাই !
বাংলাদেশ পুলিশের উজ্জ্বল নক্ষত্র  ডিআইজি হাবিবুর রহমান  শুধু   তার ব্যক্তি স্বত্বাকেই নয় বরং পুরো বাহিনীর  অবয়বকে একটি গ্রহণযোগ্য অবয়বে সমুন্নত করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন সবসময়  হাজার পাওয়া না পাওয়ার মাঝে এই বহু-মাত্রিক পাওয়া তাকে করেছে ত্রাতা ,আমরা হয়েছি ধন্য । তাই এই  অসামান্য মানুষটির কিংবদন্তীতুল্য  অবদান গুলোকে দেশ ও জাতির কাছে  তুলে ধরে   তাকে বরেণ্য করার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস-মাত্র ।






মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে সাভারের বেদে সমাজ

১৭ অক্টোবর, ২০১৪  বেদেদের মাদকের ভয়াবহ থাবা থেকে মুক্ত করতে ঢাকা জেলা পুলিশের উদ্যোগে স্থানীয় সাংবাদিক ও অন্য শ্রেণী-পেশার মানুষদের নিয়ে তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) হাবিবুর রহমান এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। সেখানে বেদেদের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ও তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের সঙ্গে টিকে থাকতে না পেরে এ সম্প্রদায়ের সদস্যদের অনেকেই ধীরে ধীরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বলে জোরালো তথ্য উঠে আসে। পুলিশ জানায়, পরিসংখ্যানে দেখা গেছে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনার পর থেকেই গ্রেফতারের শীর্ষে বেদে পল্লীর বাসিন্দারা। সাভারে মাদকের থাবা বিস্তারে এই সম্প্রদায়ের ভূমিকা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন ছিল পুলিশ প্রশাসন। মাদক গ্রহণ, সরবরাহ, বিপণন সব ক্ষেত্রেই এ সম্প্রদায়ের ভূমিকা মূলত তাদের ঐতিহ্যকেই ম্লান করে দিয়েছিল। সেই ঐতিহ্যকে রক্ষা করে সম্প্রদায়কে মাদকমুক্ত করার চ্যালেঞ্জ নিয়েই মূলত পুলিশের এই প্রশংসনীয় আয়োজন।

অবশেষে ঢাকা জেলা পুলিশের নেয়া উদ্যোগে সাড়া দিয়ে মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে সাভারের ঐতিহ্যবাহী বেদে সমাজের ৮শ পরিবার। মাদক ব্যবসা করবেন না বলে ধর্মীয় গ্রন্থ ছুঁয়ে শপথ নিয়েছেন বেদেদের ২২ সরদার। সাভার থানা অডিটোরিয়ামে ঢাকা জেলা পুলিশের উদ্যোগে বেদে সম্প্রদায়ের নেতাদের নিয়ে পুলিশের দ্বিতীয় সভায় এই দৃশ্য দেখা যায়।

সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে পুলিশের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান উপস্থিত সবাই। এ সময় বেদে সম্প্রদায়ের নেতারা তাদের বিভিন্ন সুখ-দুঃখের চিত্র তুলে ধরেন। তারা বলেন, বৈষম্যের কারণে সমাজ থেকে পিছিয়ে পড়া বেদেরা এখন তাদের পেশায় সচ্ছল জীবনযাপন করতে না পেরে মাদকের পেশায় ঝুঁকে পড়ছিল। বেদে নেতা হানিফ সম্রাট ও রমজান জানান, তাদের সমাজে এখন লেখাপড়ার সংখ্যা বাড়ছে, তাদের শিক্ষাজীবনে আনতে হলে স্থানীয়ভাবে শিক্ষা ও স্কুলের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া স্যানিটেশন, রাস্তাঘাট ও আবাসন ব্যবস্থাপনায় তাদের সহযোগিতা করলে তারা দ্রুতই সমাজের মূল ধারায় ফিরে আসতে পারবে।

তিন বেদে কন্যার বিয়ের আয়োজন

লিমা, মাছেনা, মজিরনের নতুন জীবন শুরু হতে যাচ্ছে
উৎসবের রঙ লেগেছে বেদে পল্লীতে। শুক্রবার ওদের বিয়ে। চোখেমুখে নানা স্বপ্ন আর চমৎকার ভবিষ্যতের স্বপ্নে বিভোর তিন তরুণী।ভোর থেকেই সবার মনে বেজে চলেছে বিয়ের সানাই। উৎসবের রঙ লেগেছে বেদে পল্লীতে। আসছে শুক্রবার ওদের বিয়ে। চোখেমুখে নানা স্বপ্ন আর চমৎকার ভবিষ্যতের স্বপ্নে বিভোর তিন তরুণী। ভোর থেকেই সবার মনে বেজে চলেছে বিয়ের সানাই।


মজিরন আক্তার (১৮), মাছেনা খাতুন (১৮) ও লিমা বিবি (১৯), এই তিন তরুণীর জীবনে শুক্রবার ভিন্ন একদিন। জীবনে নতুন এক অধ্যায়ে পা রাখছেন তারা। তিন-তিনটি বিয়ের আয়োজনে এখন ধুমধাম কাণ্ড গোটা বেদে পাড়ায়।
গ্রামের সবার মুখেই এখন ওদের কথা। পুরো গ্রামের মানুষের দাওয়াত। আসবেন বাইরের অতিথিরাও। তবে যাদের বিয়ে, তাদের পরিবারে আয়োজন নিয়ে নেই কোনো দুঃচিন্তা। একরকম নির্ভার আর উৎফুল্ল চিত্তেই রয়েছে তরুণীদের পরিবার। কারণ সব আয়োজনের নেপথ্যেই পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি হাবিবুর রহমান, পুলিশের  ডিআইজি। বিয়ের কেনাকাটা থেকে কন্যা দান, অতিথি আপ্যায়ন, উপহার, সব আয়োজনই হচ্ছে তার নিবিড় তত্বাবধানে।মেয়েগুলো যেন তারই! ওরাও জানে হাবিবুর রহমান তাদের পিতৃসম। বাবার হয়ে দায়িত্ব ও কর্তব্যের সব বোঝা যে নিজের ঘাড়েই তুলে নিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
কেন? প্রশ্ন মাটিতে না পড়তেই চটপট উত্তর মজিরন আক্তারের বাবা মোস্তাকিন মিয়ার।  অকপটে জানান, মেয়েকে জন্ম দিয়েছিলাম। ছিলাম কন্যাদায়গ্রস্ত বাবা। অভাব দারিদ্রতা ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। অন্ধকার আর কুসংস্কার আচ্ছন্ন আমাদের গোটা গ্রাম। আজ প্রকৃত বাবার দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশের  ডিআইজি হাবিবুর রহমান।
‘‘বছর তিনেক আগের অতীতে ফিরে যান মোস্তাকিন। মেয়ের বয়স তখন সবে ১৫। বিয়ে দেওয়ার সব আয়োজন চূড়ান্ত। তবে গরীব মানুষ। আপনারা যাকে বলেন বাল্য বিবাহ। এটাই ছিল আমাদের রীতি। হাবিবুর রহমান স্যার তখন ঢাকার পুলিশ সুপার। খবর পেয়ে ছুটে এলেন আমার আঙিনায়। বোঝালেন বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে‍,’’ যোগ করেন তিনি।
আরও বললেন, স্যার (হাবিবুর রহমান) বরকে যখন স্থিরই করে ফেলেছেন। ভেঙে ফেলার প্রয়োজন নেই। মুলতবি রাখুন। বয়স হোক। আমি নিজেই আয়োজন করে আপনার মেয়ের বিয়ে দেবো। হলোও তাই। শুক্রবার তিনি নিজে থেকেই মেয়েকে তুলে দিচ্ছেন বরের হাতে।
লিমা বিবি আর মাছেনা খাতুনের গল্পগুলোও অভিন্ন।  পোড়াবাড়ি সমাজকল্যাণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক রমজান আহামেদ  জানান, হাবিবুর রহমান স্যার ঢাকার এসপি থাকা অবস্থাতেই বেদেদের জীবন-মান উন্নয়নে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। তার হাত ধরেই বদলে যেতে শুরু করে বেদেপল্লী। উত্তরণ নামের একটি পোশাক তৈরি কারখানা স্থাপন করা হয় এখানে। যেখানে কাজ করছেন অসংখ্য বেদে নারী। নিজেরাই হয়েছেন স্বচ্ছল। আমরা বলেছি- বর-কনের সুন্দর জীবন যাপনের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব নিয়েছেন হাবিব স্যার। তাদের প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বিয়ের আয়োজন এখন, তা নিয়েই সরগরম গোটা এলাকা। যেখানে হাবিবুর রহমান স্যার আমাদের মধ্যমণি।

   ডিআইজি হাবিব পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা


মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর আত্মত্যাগের ইতিহাস তুলে ধরতে ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। দুইটি তলায় অবস্থিত জাদুঘরটি। বেজমেন্টে বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরএবং গ্রাউন্ড ফ্লোরে বঙ্গবন্ধু গ্যালারি। বঙ্গবন্ধু গ্যালারির প্রবেশমুখে বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ কিছু ছবি এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে দুটি ডকুমেন্টারি। আর কাচের দেয়ালে ঘেরা বাক্সে থরে থরে সাজানো মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পুলিশ সদস্যদের ব্যবহূত টুপি, বেল্ট, টাই, স্টিক, ডায়েরি, বই, পরিচয়পত্র, চশমা, কলম, মেডেল, বাঁশি, মাফলার, জায়নামাজ, খাবারের প্লেট, পানির মগ, পানির গ্লাস, রেডিও, শার্ট, প্যান্ট, র্যা ঙ্ক ব্যাজসহ টিউনিক সেট, ক্যামেরা, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মানিব্যাগ, লোহার হেলমেট, হ্যান্ড মাইক, রক্তভেজা প্যান্ট-শার্ট, দেয়ালঘড়িসহ আরো কত কী! আরেক পাশে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ব্যবহূত ৭.৬২ এমএম রাইফেল, ২ ইঞ্চি মর্টার, মর্টার শেল, সার্চ লাইট, রায়ট রাবার শেল, রিভলবার, .৩০৩ এলএমজি, মেশিনগান, ৭.৬২ এমএম এলএমজি, .৩২ বোর রিভলবার, .৩৮ বোর রিভলবার, .৩০৩ রাইফেল, ১২ বোর শটগান, ৯ এমএম এসএমজিসহ আরো অনেক অস্ত্র। আছে মোগল, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের পুলিশের ইউনিফর্ম এবং পুলিশ সদস্যদের ব্যবহত তরবারি, চাবুক, শিঙা, রামদা, ঘোড়ার গাড়িসহ অন্য জিনিসপত্র। জাদুঘর প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে : জাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তা ও জাদুঘর প্রতিষ্ঠা কমিটির সভাপতি হিসেবে আছেন  অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান। তিনি শোনান এই জাদুঘর তৈরির পেছনের কথা। বললেন, ‘আমাদের ডিসি মোস্তাক আহমদ একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন। সেটি তৈরি করতে গিয়ে শহীদ পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন স্মারক সংগ্রহ করি। রাজারবাগে পঁচিশে মার্চ যে পুলিশ সদস্যরা প্রতিরোধ তৈরি করেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলি। সেই থেকেই জাদুঘর প্রতিষ্ঠার বিষয়টি মাথায় আসে। এরপর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের টেলিকম ভবনে প্রাথমিকভাবে সংগ্রহগুলো সংরক্ষণ করি। ২৩ জানুয়ারি স্থায়ী ভবনে সংগ্রহগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। এতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরাও সহায়তা করেছেন।

 মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত বেতারযন্ত্র : একাত্তরের পচিশে মার্চ রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের কন্ট্রোলরুমে রাখা বেতারযন্ত্রের মাধ্যমে বেতার অপারেটর শাহজাহান মিয়া রাজারবাগ আক্রান্ত হওয়ার খবরটি দেশের বিভিন্ন পুলিশ লাইনসে প্রেরণ করেন। ঘোষণাটি ছিল, ‘পূর্ব পাকিস্তানের সব পুলিশ লাইনসের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। পাকিস্তান আর্মি রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে আক্রমণ চালিয়েছে। আপনারা নিরাপদে আশ্রয় নিন।
 বেতারযন্ত্রটি জাদুঘরে রাখা আছে। পাগলা ঘণ্টা : পচিশে মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে আক্রমণ করলে তৎকালীন আইজিপির বডিগার্ড কনস্টেবল আব্দুল আলী পাগলা ঘণ্টা বাজিয়ে পুলিশ সদস্যদের জড়ো করেন। পাগলা ঘণ্টার আওয়াজ শুনে পুলিশ সদস্যরা অস্ত্র নিয়ে সমবেত হন। তার পরই জয় বাংলাস্লোগান দিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করেন।


সেই ঐতিহাসিক পাগলা ঘণ্টাটি এখন জাদুঘরে সংরক্ষিত। পৃষ্ঠাজুড়ে মুক্তিযুদ্ধ : জাদুঘরে রয়েছে একটি লাইব্রেরিও। এখানে মূলত মুক্তিযুদ্ধনির্ভর বইগুলো রাখা হয়েছে। আছে পুলিশ সদস্যদের আত্মজীবনী, রণাঙ্গনের স্মৃতি, পুলিশের নানা অবদানের ওপর লেখা বই। পাঠকরা চাইলে লাইব্রেরিতে বসে বই পড়তে পারেন। চারটি কম্পিউটারের মাধ্যমে অনলাইনে বিভিন্ন বই পড়তে পারবেন। আছে আরো লাইব্রেরির পাশেই স্যুভেনির শপ। সেখান থেকে নির্ধারিত মূল্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকাপ্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ খণ্ডবই, শহীদ পুলিশের রক্তের ঋণ নামক বই, প্লেট, মগ, কলমদানি, চাবির রিং, ব্যাগ, গেঞ্জি, পেপার ওয়েট, কলম ও ক্রেস্ট কিনতে পারবেন।

ডিআইজি হাবিব এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত

পুলিশ সদর দপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসের আসরে এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্টহিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। 
তাছাড়া হাবিবুর রহমান উত্তরণ ফাউন্ডেশন নামে একটি সামাজিক সংগঠনেরও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এই সংগঠনের মাধ্যমে হিজড়া ও বেদে সম্প্রদায়ের লোকজনকে নানাভাবে সহায়তা করে দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছেন হাবিবুর রহমান।  

ডিআইজি হাবিবুর রহমান জনবান্ধব পুলিশের অনন্য পথিকৃৎ


জনবান্ধব পুলিশ। জনতাই পুলিশ, পুলিশই জনতাস্লোগানধর্মী প্রতিপাদ্য। বলাবাহুল্য, পুলিশ ও জনগণের সম্পর্ক পরিপূরক। কখনো কেউ বলে, পুলিশও মানুষ। যেন পুলিশ মানুষই নয়! পুলিশ নিয়ে আজো অনেকের ধারণা নেতিবাচক। রাজনীতি বা গণমাধ্যম পুলিশকে ইতিবাচক বিশ্লেষণ করে খুব কমই। কিন্তু আজকের বাংলাদেশে পুলিশ আধুনিক। সেটা শুধু কর্মপরিধিতে নয়। সৃজনশীলতা ও মননশীলতার দিক থেকেও এখন বহুমাত্রিক দৃষ্টান্ত। পুলিশ এখন উপসংহার নয়, উদাহরণের গল্প।সিনেমার গল্প, চরিত্রের মতো কাল্পনিক নয়, বাস্তব হিরো। তেমনি একজন নায়ক হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম। পুলিশ সদর দপ্তরের নতুন ডিআইজি। একজন পেশাদার ও সফল পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশি গুরুদায়িত্ব পালনে সাফল্যের স্বীকৃতি ছাড়াও মানুষের জন্য কাজ করা ব্যতিক্রমধর্মী চিন্তা ও অনবদ্য ভূমিকা তাকে দিয়েছে বিশেষ খ্যাতি। জনবান্ধব পুলিশের এক অনন্য পথিকৃৎ। জনমনে প্রশংসিত এক কিংবদন্তি।ডিআইজি হাবিবুর রহমান পুলিশবাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন তার মানবিক মূল্যবোধ, প্রজ্ঞা ও সমাজকল্যাণকর উদ্যোগের মাধ্যমেতার উদ্যোগ মানবকল্যাণে অনন্য দৃষ্টান্ত রেখেছে। মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে গড়ে তুলেছেন উত্তরণ ফাউন্ডেশন। অপরাধমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে পুলিশি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হাবিবুর রহমান তার মেধা, মনন ও আন্তরিকতা দিয়ে সমাজ বিশ্লেষণ করেছেন। অপরাধ সীমান্তে বসবাসরত অনগ্রসর বিশেষ মহলের অন্ধকার জীবনধারার সামনে সূচনা করেছেন আলোকিত পথ। তাদের করেছেন আলোর পথযাত্রী। নিজে হয়েছেন আলোকবর্তিকা। ডিআইজি ও উত্তরণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান স্বকীয় প্রচেষ্টায় পুলিশ সম্পর্কে সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকে পাল্টে দিয়েছেন। প্রশংসিত করেছেন সমকালীন পুলিশের প্রবণতা ও উদ্যমকে। পুলিশের জনকল্যাণধর্মী ভূমিকার অন্যতম আইকন ডিআইজি হাবিবুর রহমান হয়ে উঠেছেন রোল মডেল। ডিআইজি হাবিবুর রহমান পুলিশ জনগণের বন্ধুএই প্রবাদের সার্থকতাকে তিনি শতভাগ প্রতিপন্ন করেছেন তার পুলিশি ভূমিকায়। যে ভূমিকার গল্প কিংবদন্তি হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দেশজুড়ে। পুলিশ পারে, একথা উদাহরণসহ সত্য। সমাজ পরিবর্তনে, মানুষের কল্যাণে, মানবতার স্বার্থে পুলিশের কার্যকর ভূমিকায় ব্যতিক্রমধর্মী অবদান রেখে চলেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসছে তার অনন্য সাফল্যগাঁথা। যেসব এলাকায়, যে জনগোষ্ঠীর মধ্যে তিনি পরশপাথর হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে তিনি রোল মডেল হিসেবে পেয়েছেন জনমানুষের আকাশছোঁয়া ভালোবাসা। জনপ্রিয়তা, খ্যাতি, আস্থায় ডিআইজি হাবিবুর রহমানের নাম ভূমিকা এখন পুলিশবাহিনীরই গর্ব। যে সাফল্যের গল্প এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশে পুলিশের সমকালীন জনবান্ধব নীতির উপাখ্যান। যেখানে পুলিশের উদ্যমী ও উদ্ভাবনী ভূমিকায় পশ্চাদপদ বেদে জনগোষ্ঠীর জীবনধারা পাল্টে গেছে। বেদেপল্লিতে লেগেছে দিনবদলের ছোঁয়া। প্রমাণ হয়েছে, পুলিশ চাইলে বদলে দিতে পারে উন্নয়নবঞ্চিত, অবহেলিত সমাজ বাস্তবতা। শুধু তাই নয়, অনগ্রসর সমাজের নারী উন্নয়নে তাদের আত্মবিশ্বাস বিকাশে, কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলার মতো মানবকল্যাণবাদী ভূমিকাকে পুলিশ কাজ করে দেখিয়েছে সমাজ পরিবর্তনেও পুলিশের অবদান অনুসরণীয়। বিশেষ করে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জীবনবোধ ও জীবনমানের উন্নয়নে পুলিশ যে দৃষ্টান্ত রেখেছে তা পথিকৃতের।বর্তমানে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি হাবিবুর রহমান তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে যে সাফল্যধারার সূচনা করেছেন তা এক মাইলফলক হিসেবে মূল্যায়িত হচ্ছে। যার সূত্রপাত হয়েছিল কয়েক বছর আগে। যখন তিনি ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) এবং তারপর পুলিশ সদর দপ্তরে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে কর্মরত থাকার সময়। গোপালগঞ্জের চন্দ্রদীঘলিয়া গ্রামের মানুষ, কৃতী সন্তান হাবিবুর রহমান। বাবার নাম আব্দুল আলী। মুক্তিযুদ্ধের সুমহান চেতনার অনুসারী। ১৯৯৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ১৭তম বিসিএস ক্যাডার হিসেবে সহকারী পুলিশ সুপার  (এএসপি) পদে যোগদান করেন। ২০০০ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগ দেন। ২০০১ সালে পদায়ন হন আরএমপিতে সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে। জাতিসংঘ শান্তিমিশন শেষে ২০০৯ সালে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার এবং ২০১১ সালে ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) হন হাবিবুর রহমান। পরবর্তীতে পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দেন অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পেয়ে। সবশেষ বর্তমানে রয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি হিসেবে। ডিআইজি হাবিবুর রহমানের একক প্রচেষ্টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনে প্রতিষ্ঠিত হয় পুলিশ মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘরমুক্তিযুদ্ধের চেতনার দায়বদ্ধতা থেকেই তার এই উদ্যোগ। যা এক ঐতিহাসিক স্থাপনাআলোকিত এ পুলিশ কর্মকর্তার চিন্তা-চেতনায় রয়েছে তার পিতার প্রভাব। যিনি তাকে মানুষ নিয়ে ভাবতে শিখিয়েছিলেন। বলেছিলেন- সব মানুষকে সমানভাবে দেখতে হবে, তাহলেই মানুষে মানুষে ভেদাভেদ কমে যাবে। বাবার শিক্ষার প্রতিফলন হিসেবে তার কাছে গুরুত্ব পেয়েছে বেদে সম্প্রদায়, হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বা দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। যাদের নিয়ে তিনি কাজ করেছেন স্বীয় পেশাগত বলয় থেকেও। যে কাজ সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে এবং সমাজে সাড়া জাগিয়েছে। যার দৃষ্টান্ত হয়ে আছে রাজধানীতে, সাভারে, রাজারবাগে বা আশুলিয়ায়। একইসঙ্গে বেদে সম্প্রদায় ও হিজড়াদের মধ্যেও। 

পর্যবেক্ষক মহলের মতে, একজন পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান সমাজ উন্নয়নে যে মাইলফলক দৃষ্টান্ত রেখেছেন তা সম্ভব হয়েছে তার সৃজনকুশল ও মননশীলতার সুবাদে। ইদানিং পুলিশের মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী বিভিন্ন ইতিবাচক উদ্যোগ বাস্তবায়নের প্রবণতা দেখা যায়। হাবিবুর রহমানের উদ্যোগটি সেক্ষেত্রে অনন্য-অসাধারণ। যিনি তার নিজস্ব মূল্যবোধে উদ্দীপ্ত এবং বিশ্বাস করেন মানুষ মানুষের জন্য। তাই স্বীয় আন্তরিক প্রচেষ্টায় তিনি সমাজ বাস্তবতায় বহুমাত্রিক পরিবর্তনের সফল রূপকার হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন। পুলিশি ভূমিকা হিসেবে যা সমাজ-মানুষের মধ্যে এক বিস্ময়কর নীরব বিপ্লব সূচনা করেছে। তিনি প্রমাণ করেছেন, মানুষের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বদলে যেতে পারে অনুন্নত জনপদ, পাল্টে যেতে পারে একটি জনপদের জীবনযাত্রার চেহারা। যুগযুগ ধরে বঞ্চিত মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে পারে, নারী ও যুবসমাজ স্বাবলম্বী হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। সমাজ থেকে কুসংস্কারের অন্ধকার দূর হয়ে সূত্রপাত হতে পারে নতুন পথযাত্রা। সমাজ থেকে অন্যায়, অবিচার, অপরাধ, দুর্নীতি দূর করে শান্তি-শৃঙ্খলা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা ও অগ্রযাত্রা দূর করতে যা হতে পারে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন প্রতিশ্রুতি। ডিআইজি হাবিবুর রহমান যখন ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) তখনই সমাজ থেকে অপরাধ দূর করতে গিয়ে তিনি অনুধাবন করেন- সামাজিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সমস্যার গভীরে রয়েছে বিদ্যমান এক বাস্তবতা। যা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নৈতিকতা ও আর্থিক অসঙ্গতির বেড়াজালে বন্দি। বঞ্চনা, উপেক্ষা, অবহেলায় স্বয়ংক্রিয় অসুস্থ সমাজকে শুধু আইনি পদক্ষেপে সুস্থ করা সম্ভব নয়, তাদের সুপথে আনতে হলে কঠিন ও দীর্ঘ সময় ধরে সমাজ উন্নয়ন ও মানবিক কল্যাণের পথে নিবিড় প্রয়াস প্রয়োজন। সেই চিন্তাধারা থেকেই তিনি কাজ শুরু করেন। সমাজ বিশেষজ্ঞদের মতে, বেদে ও হিজড়া সমাজকে অপরাধমুক্ত করতে ডিআইজি হাবিবুর রহমানের উদ্যোগ সফল হয়েছে। এক্ষেত্রে একজন পুলিশ কর্মকর্তার চিন্তার রূপায়ণ মূলত একটি দর্শন। যা মানবিক কল্যাণে পুলিশের ভূমিকার সাফল্য ও গুরুত্বকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। সমাজ সংস্কারক হিসেবেও তার ভূমিকা মূল্যায়নযোগ্য। ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) থাকাকালে হাবিবুর রহমান সাভার এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে প্রথমে সমস্যাটি বিবেচনায় নেন। সামাজিক অস্থিরতা ও মাদকের ভয়াবহতা থেকে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে সাভারের বেদেপল্লির বেদে সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা পুলিশের অভিযানের সামনে এক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়। সার্বিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে হাবিবুর রহমান এই সংকট নিরসনে কার্যক্রম হাতে নেন।সাভারের অমরপুর, পোড়াবাড়ি, কাঞ্চনপুরসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রায় ২০ হাজার বেদে পরিবারের বসবাস। এই বেদেপল্লিতে হাত বাড়ালেই ইয়াবা, ফেনসিডিল। মাদক বাণিজ্যে জড়িত বেদেরা চট্টগ্রামে সাপের খেলা দেখাতে গিয়ে ফেরার পথে মাদকদ্রব্য নিয়ে ফেরে। মাদকের ছোবলে সমাজ ক্ষতবিক্ষত হয়। মরণ নেশা ইয়াবার বিস্তার প্রতিরোধে পুলিশ বেদেদের পেশার নেপথ্যের প্রবণতা রোধে তাদের জন্য নতুন পেশার কথা বিবেচনা করে। কাজটি সহজ ছিল না মোটেও। কেননা বেদে জীবনের সমস্যা বিচিত্র। নৌকায় বসবাস, ভাসমান জীবন, ছিন্নমূল, লেখাপড়া নেই, কর্মসংস্থান নেই, কর্ম উদ্যোগের অভাব, অলস জীবনযাপন, প্রতারণামূলক ধান্ধা, সাপের খেলা, শিঙ্গা লাগানো, তাবিজ কবজ এসব পেশার সাথে রয়েছে সামাজিক বৈষম্য। এমনকি মৃত্যুর পর কবরের ব্যবস্থাও নেই। এ অবস্থায় সাভারের বেদেপল্লিতে তাদের বাসস্থান গড়ে উঠলেও জীবনমান অনুন্নত। বেদেসমাজ উন্নয়নে প্রথমে তাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা, কবর সমস্যার সমাধান করা হয়। পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের জন্য আলাদা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, তাদের প্রশিক্ষণ, পুঁজি ইত্যাদির ব্যবস্থা নেওয়া হয়। হাবিবুর রহমানের উদ্যোগের সঙ্গে হাত মেলান সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। পুলিশ ও জনগণ মিলে এলাকার অনগ্রসর একটি জনগোষ্ঠীকে বিকল্প কর্মসংস্থানের মাধ্যমে নতুন গতিপথে চালিত করে। আর এভাবেই মাদক বাণিজ্য ও অপরাধ জগত থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। একজন এসপি হাবিবুর রহমান সাভারের বেদেপল্লিতে পরিবর্তন আনতে গিয়ে যে মানবিক আবেদন নিয়ে কাজ করেন তা বেদে জনগোষ্ঠীর কাছে তার জনপ্রিয়তাকে বিশেষ মর্যাদায় উন্নীত করে। তিনি হয়ে ওঠেন তাদের আপনজন, কাছের মানুষ। শতাধিকের ওপর বেদে মহিলার কর্মসংস্থানের জন্য সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। বেদে নারীদের তৈরি করা পোশাকের বাজারেরও ব্যবস্থা করা হয়। এসপির উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়ে বেদে মেয়েদের পাশে এগিয়ে আসেন তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠানের এক কর্ণধার নাজনীন বেগম। আশুলিয়ার ফ্যান্টাসি কিংডমের সামনে চালু করা হয় শো রুম। উত্তরণ বুটিকসবেদে নারীদের উত্তরণের আনুষ্ঠানিক ধাপ সেটি। অন্যদিকে, ৩৫ বেদে যুবককে সাপ খেলার বদলে গাড়ি চালানোর পেশায় নামানো হয়। এজন্য তাদের জন্য ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। মহাখালি ও উত্তরায় ব্র্যাক সেন্টারে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ব্র্যাক এক্ষেত্রে সহায়তা দেয়প্রশিক্ষণ শেষে লাইসেন্স নিয়ে এসব বেদে যুবক গাড়ি চালানোকেই এখন পেশা হিসেবে নিয়েছে। সাভারের বেদে সম্প্রদায় বংশ পরম্পরায় পেশা বদলে এখন জীবন জীবিকার প্রয়োজনে নতুন পেশায় নেমেছে। নতুন জীবনের হাতছানি তাদের সামনে। বদলে যাচ্ছে সময়। সেই সাথে জীবনমান। যে হাতে এক সময় থাকতো কালকেউটে, কালনাগিনী আজ সেই হাতে থাকছে গাড়ির স্টিয়ারিং। এগিয়ে যাচ্ছে সাভারের বেদেসমাজ। একসময় যে বেদের মেয়ে জোসনারা সাপ নাচাতো, এখন সেই নাগিন ডান্সের বদলে সুই-সুতোর নিপুণ সেলাইয়ে জীবনের নয়া জাগরণ। শিক্ষাদীক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছে বেদে প্রজন্ম। পুনর্বাসনের উদ্যোগের ধারাবাহিক কর্মসূচি, তাদের জীবনকে অর্থবহ করে তুলেছে। নাগরিক মর্যাদা, সুযোগ-সুবিধা তাদের সামনে সম্ভাবনার নয়া দিগন্তের সূচনা করেছে। একসময় যে জীবনে ছিলো মাদকের আগ্রাসন, দ্বন্দ্ব, টানাপড়েন, এখন সেখানে নীতি- নৈতিকতার অভ্যুদয়। জীবন হয়ে উঠছে সুন্দর। বাল্যবিবাহসহ সামাজিক অনাচার-কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে এসে বেদেসমাজ এখন সার্বক্ষণিক কর্মব্যস্ত। তারা এখন সচেতন।সাভারে একসময় ছিল সাপের হাট। এখন সাপুড়েদের আনন্দ উন্নত জীবনবোধে। সম্মানজনক জীবিকা, স্বাভাবিক দিন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা বেদেসমাজের জীবনধারা পাল্টে দিতে পুলিশবাহিনীর উদ্যোগ ও সহায়তা ফলপ্রসূ হয়েছে। যা ভবিষ্যতে সারা দেশে ভাসমান জীবনের উন্নয়নে পথিকৃৎ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আর ডিআইজি হাবিবুর রহমানকে এক্ষেত্রে আইকনহিসেবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। যিনি পুলিশি দক্ষতায় সমাজ পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছেন। সাভারের বেদেপল্লি। অশিক্ষা আর কুসংস্কারের অন্ধকারাচ্ছন্ন এক জনবসতি। মাদকসহ নানা অপরাধ, অনিয়মে জর্জরিত। সমাজে বাল্যবিয়েই নিয়ম। একটি অনুন্নত সমাজে সেটি অস্বাভাবিকও নয়। তেমনি একটি বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন সেই সময়ের এসপি হাবিবুর রহমান। বাল্যবিয়ে বন্ধ করে ছেলে ও মেয়েপক্ষকে বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে বোঝাতে সক্ষম হন। তার কথা মেনে নেন উভয় পরিবার। তিন বছর পর। যখন ছেলে মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক। তখন তাদের বিয়ের সার্বিক দায়িত্ব বহন করেন সেই পুলিশ কর্মকর্তাই। বেদেপল্লিতে একদিনেই তিন জোড়া তরুণ-তরুণীর বিয়ে উৎসব। ব্যাপক আয়োজন। মজিরন আক্তার, মাছেনা ও লিমা বিবির বিয়েকে ঘিরে বেদে সম্প্রদায় বাল্যবিয়েমুক্ত সমাজ চেতনার দিকে এগিয়ে যায়। কথা দিয়ে কথা রেখে আরেকবার উজ্জ্বল এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন দেশপ্রেমিক পুলিশবাহিনীর চৌকস কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান। হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের জীবন বদলে দেওয়ার কাণ্ডারিও হাবিবুর রহমান। পুলিশের এই ডিআইজি বেদেদের মতোই হিজড়াদের জীবন-মান উন্নয়নে গড়ে তোলেন তিনটি বিউটি পার্লার। মাস কয়েক আগে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের আত্মবিশ্বাসকে আরও বাড়িয়ে দিতে নিয়ে আসা হয় বিশ্বখ্যাত হেয়ার স্পেশালিস্ট জাভেদ হাবিবকে। এতে করে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা নতুন উন্মাদনায় মেতে ওঠে। সমাজের পিছিয়েপড়া এই জনগোষ্ঠীকে হাতে-কলমে শিক্ষা দেন তিনি। গত ঈদুল ফিতরে তৃতীয় লিঙ্গের প্রায় চার শতাধিক মানুষের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণের সময় ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে আপনাদের (তৃতীয় লিঙ্গের) জন্য সাভার, আশুলিয়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিনটি পার্লার করে দিয়েছি। উত্তরায় ফ্যাক্টরি ও টেইলার্স করে দিয়েছি। একটি জুট ফ্যাক্টরিতে ২০ জনের কাজের ব্যবস্থা করেছি। বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি এবং সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মমুখী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি যেন আপনারাও আমাদের সকলের মতো সম্মানের সাথে বাঁচতে পারেন।



ভিন্ন পুলিশিং, অনন্য উত্তরণ
ঢাকার সাভার উপজেলার বংশী নদীর তীরে পোড়াবাড়ি, অমরপুর, কাঞ্চনপুর ও বাড্ডা গ্রামের একাংশ নিয়ে অন্তত ১৫০ বছর আগে গড়ে ওঠা বেদেপাড়ায় এখন পাকা ঈদগাহ আছে। পাড়ায় ১১টি পাকা রাস্তা হয়েছে। হয়েছে স্যানিটেশনের ব্যবস্থা। বুটিক কারখানায় কাজ করছেন বেদে নারীরা। স্থানীয় স্কুল-কলেজে বিনা বেতনে পড়ছে ৩১৭ বেদে শিক্ষার্থী। তাদের বিনা পয়সায় পড়ানোর জন্য খোলা হয়েছে কোচিং সেন্টার। ১০৩ জনের জন্য বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৪২ জন নারীকে চাকরি দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন পোশাক কারখানায়। ৩৬ জন বেদে যুবককে দেওয়া হয়েছে গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ। পুলিশে চাকরি করছেন তিনজন। বেদেপাড়ার ভেতরে স্কুল হচ্ছে। ভাসমান বেদেদের আবাসনের জন্য পৌনে তিন একর জমি বরাদ্দ হয়েছে। বাল্যবিবাহ কমেছে। এখন বেদেপাড়ার লোকজন জানেন, ১৮ বছর বয়সের পর বিয়ে করলে সব খরচ দেবেন এসপি হাবিবুর রহমান।
মাত্র তিন বছরে এই বিপুল পরিবর্তন বেদেপাড়াকে মাদকের হাট’-এর কুখ্যাতি থেকে মুক্তি দিয়েছে। কীভাবে শুরু হলো এই কর্মযজ্ঞপ্রশ্ন করতেই শুরু করলেন এসপি হাবিবুর রহমান, ‘তাদের কী কাজ দেওয়া যায়, তা বোঝার জন্য বেদেপাড়ায় গেলাম। পোড়াবাড়িতে একটা খোলা মাঠের পাশে সবাই জড়ো হয়েছে। সরদাররা জানালেন, এটা ঈদগাহ মাঠ। এখানে বেদে সম্প্রদায়ের (৯৮ শতাংশ মুসলিম) লোকেরা ঈদের নামাজ আদায় করেন। বললাম, আসছে ঈদে আপনারা পাকা ঈদগাহে নামাজ পড়বেন। সরদাররা মুখ চাওয়াচাওয়ি করলেন। সাভার পৌরসভার তখনকার মেয়র রেফাত উল্লাহকে খবর পাঠালাম। মেয়র এলেন একজন কাউন্সিলরকে নিয়ে। সবার সামনে তাঁর কাছে সহায়তা চাইলাম। তিনি বললেন, উন্নয়ন প্রকল্পের ৫০ লাখ টাকা তাঁর হাতে আছে। মেয়র পুরো টাকাই ১ নম্বর ওয়ার্ডে বরাদ্দের ঘোষণা দিলেন। সঙ্গী কাউন্সিলর বললেন, এই টাকা নয়টা ওয়ার্ডের জন্য এসেছে। অন্য কাউন্সিলররা মানবেন না। মেয়র বললেন, “আমরা তাঁদের বোঝাব।”’
অবশ্য এর আগে ২০০৮ সালে মাদক থেকে পাড়াকে রক্ষা করতে পোড়াবাড়ি সমাজকল্যাণ সংঘ গঠন করেন ১০৫ বেদে তরুণ। এখন এর সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম। সাধারণ সম্পাদক রমজান মাহমুদ। অধরচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করা রমজানই এই সংঘের উদ্যোক্তা। নিজেদের মতো করে আলোচনা, মানববন্ধন, ব্যক্তি পর্যায়ে বোঝানো, উঠান বৈঠক ইত্যাদি করে তাঁরা মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছিলেন।
তারপর কর্মপ্রক্রিয়া নিয়ে রমজানদের সঙ্গে বসলেন এসপি হাবিব। জানলেন বেদেসমাজে নারীরাই মূলত কাজ করেন। তাই নারীদের কাজের ব্যবস্থা আগে করতে হবে।
যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলেন হাবিবুর রহমান। তিন ব্যাচে ১০৫ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হলো। হাবিবুর রহমান বললেন, ‘হাত পাতলাম পরিচিতজনের কাছে। ৫০টা সেলাই মেশিন কেনা হলো। পোশাক কারখানার মালিক নাজনীন আক্তার পূর্বপরিচিত ছিলেন। তাঁকে পরিকল্পনাটা জানালাম, তিনি এগিয়ে এলেন। ২৬০০ বর্গফুট জায়গা ভাড়া নিয়ে বেদেপাড়ায় দাঁড়িয়ে গেল এক তলা বুটিক কারখানা। কাজ শুরুর পর দেখা গেল, সেলাই বাঁকাতেড়া হচ্ছে। নাজনীন বললেন, “ভাই, কাপড় তো সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।বললাম, হোক। দরকার হলে আপনাকে এর ক্ষতিপূরণ দেব। আপনি তাদের কাজে আটকে রাখেন। মাদক বেচায় যেন ব্যবহৃত না হয় ওরা। চালু হয়ে গেল উত্তরণ ফ্যাশন

এই কারখানায় এখন যেসব নারী কাজ করেন, তাঁদের প্রতি সপ্তাহে মজুরি দেওয়া হয়। জনপ্রতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা পান একেকজন নারী। তাঁদের তৈরি পোশাক বিক্রির জন্য আশুলিয়ায় ফ্যান্টাসি কিংডমের পাশে একটি শোরুম চালু করা হয়েছে।
সম্প্রতি এই বুটিক কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, ঈদ সামনে রেখে নারীরা সেলাই নিয়ে ব্যস্ত। সাপের খেলা দেখাই..., শিঙা লাগাই গো শিঙা...বলে পাড়া-মহল্লায়, গ্রাম-গঞ্জে হাঁক ছাড়তেন যে বেদে নারী, সেই সাজেনুর রহমান এখন বুটিক কারখানাটির সুপারভাইজার। আরেকজন সুপারভাইজার তকলিমা বেগম।
তিন সন্তানের মা সাজেনুর প্রথম আলোকে বললেন, ‘আমরা এখন সমাজে সম্মান পাই। আগে কোনো সম্মান ছিল না। বাচ্চারা স্কুলে যাইতেছে।দুই সন্তানের মা সুপারভাইজার তকলিমা বেগমের কাছেও পরিবর্তনের মূল সূচক সমাজে সম্মান পাওয়া

হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নারীদের পর নজর দিলাম শিশুদের দিকে। এদের স্কুলে পাঠাতে হবে। বেদেপাড়ায় কোনো স্কুল নেই। মা-বাবা শিক্ষিত না হওয়ায় ঘরে পড়ালেখা হয় না। ঝরে পড়তে থাকে শিক্ষার্থীরা। তাদের বিনা মূল্যে পড়ানোর জন্য একটা কোচিং সেন্টারের ব্যবস্থা করলাম। সেখানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এসে পড়ায়। ১০৫ বেদে শিক্ষার্থী এখন সেখানে পড়ছে।
হাবিবুর রহমান জানান, ইতিমধ্যে বিত্তবান ব্যক্তিদের সহায়তায় বেদেপাড়ায় ২৪ শতাংশ জমি কেনা হয়েছে স্কুলের জন্য। আবেদন করার পর জেলা পরিষদ ভবন তৈরির জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে।
লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে এমন তরুণদের জন্য কম্পিউটার ট্রেনিংয়েরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাঁচটি কম্পিউটার অনুদান নিয়ে মাস দুয়েক আগে চালু করা হয়েছে উত্তরণ কম্পিউটার সেন্টার। পরিচালনা করেন পোড়াবাড়ি সমাজকল্যাণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক রমজান মাহমুদ।
রমজান জানান, অমরপুর গ্রামে ভাড়া বাড়িতে দুজন প্রশিক্ষক দিয়ে এই সেন্টারটি চলছে। এখন ৪০ জন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
 হাবিবুর রহমান জানান, সবচেয়ে কঠিন গ্রুপ বেদে যুবকেরা। এঁদের স্ত্রীরা কাজ করেন। এঁরা শুয়ে-বসে থাকেন। মাদকে জড়ানোর ঝুঁকি এঁদের সবচেয়ে বেশি। কল্যাণ সংঘের মাধ্যমে এঁদের একটা দলকে নিয়ে বসলেন তিনি। তাঁরাও কাজ করতে রাজি।
এসপি হাবিব বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জানলাম, ব্র্যাকে ভালো ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। এর দায়িত্বে আছেন পুলিশেরই সাবেক কর্মকর্তা এ এস হোসাইন। গিয়ে ধরলাম, স্যার, একটা ব্যবস্থা করেন। তিনি জানালেন, ফ্রি করানোর জন্য কোনো বাজেট নেই। ফিরে এলাম। গেলাম এনজিও ব্যুরোর তখনকার মহাপরিচালক মো. নুরুন্নবী তালুকদারের কাছে। তিনি ভেবেচিন্তে বললেন, “একটা আবেদন করেন।আবেদনটি তিনি ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হাসান আবেদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। ৩৬ জনের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব নিল ব্র্যাক। এদের ২৪ জন ইতিমধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্সও পেয়ে গেছে।
বেদেপাড়ার লোকসংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। এদের ৩০ শতাংশের নিজস্ব জমিজমা আছে। বাকিরা ভাসমান। এই ভাসমান জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কাজ করা কঠিন। এদের যাতে মাথাগোঁজার একটা ব্যবস্থা হয়, সে জন্য সাবেক জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার কাছে কিছু জায়গা চান হাবিবুর রহমান। তিনি পৌনে তিন একর খাসজমি বরাদ্দ দেন। আবাসনের ব্যবস্থা হলে এদের সমাজের চলমান কাজের সঙ্গে যুক্ত করা সহজ হবে।
তাহলে বেদে সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যগত উপস্থিতি কি আর থাকবে না? তাদের জাত পেশা সাপ ধরা, খেলা দেখানো ইত্যাদি কি হারিয়ে যাবে?
হাবিব বললেন, ‘চেষ্টা করছি, বিনিয়োগকারী পেলে এক বা একাধিক সাপের খামার করার। সেটা করতে পারলে এদের পেশাটা টিকে থাকবে।তিনি জানান, ‘ঠারবেদেদের নিজস্ব ভাষা। এ ভাষা সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ভাষা ইনস্টিটিউটকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা একটি দল গঠন করে এ ভাষা সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে।
এসপি হাবিবকেও আনন্দাশ্রুতে ভাসিয়েছেন বেদেরা। তাঁরা চাঁদা তুলে পাড়ায় একটা মসজিদ করেছেন। নাম দিয়েছেন হাবিবিয়া জামে মসজিদ
বলতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন এসপি, ‘আমি সাধারণ একজন মানুষ। সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাধারণ পুলিশিংয়ের বাইরে হয়তো কিছু কাজ করেছি। তার জন্য এই সাভারে আমার নামে মসজিদ! এঁদের প্রতি শ্রদ্ধায় আমার মাথা নুয়ে আসে।


 


ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহের বিখ্যাত উক্তি- যে দেশে গুণীর কদর নেই সেই দেশে গুণী জন্মাতে পারে না সময় এসেছে গুণীজনের গুনকে স্মরণ করার , সময় এসেছে পুলিশ বাহিনীর উৎকর্ষতাকে ছড়িয়ে দেবার , আলোকিত হবার এবং আলোকিত করবার , নতুন প্রজন্মের পুলিশিং হোক আরো বেশি  সামাজিক পারিবারিক এবং রাষ্ট্রিক ,আসুন এই প্রত্যয় বুকে ধারণ করি ।